![](https://bangobarta.webbandhanofficial.com/wp-content/uploads/2024/06/modi.jpg)
২০১৪ সালের সঙ্গে ২০২৪ সালের সবচেয়ে বড় ফারাকটা হল, ‘এনডিএ’ শব্দটা আর প্রতীকী নয়। এই ১০ বছরের সময়কাল পেরিয়ে সবচেয়ে বড় রাজনৈতিক সিলমোহরটা হল, নরেন্দ্র মোদি প্রধানমন্ত্রী থাকলেও, এই সরকার শুধুই মোদির নয়। একক শক্তিশালী যুগের চর্চা কর্পূরের মতো উবে গিয়েছে। বিদেশি সংবাদমাধ্যমও বলছে, মোদি অপরাজেয় নন। কারণ, মহাশক্তিশালী নরেন্দ্র মোদিকে আজ একঝাঁক আঞ্চলিক দলের উপর ভরসা করে মিলিজুলি সরকারেই ফিরতে হচ্ছে। জোট শরিকদের সংখ্যার সাহায্য নিয়ে রবিবার মোদি তাঁর তৃতীয় ইনিংস শুরু করতে চলেছেন। সন্ধ্যা ৬টায় রাষ্ট্রপতি ভবনে হবে শপথগ্রহণ। আর আজ, শুক্রবার এনডিএ’র এমপিদের নিয়ে বৈঠক। তার আগেই অবশ্য সদ্য জয়ী এমপিদের বৈঠকে বিজেপির সংসদীয় দলের নেতা হিসেবে গ্রহণ করা হবে নরেন্দ্র মোদিকে। নির্বাচন কমিশনের পক্ষ থেকে রাষ্ট্রপতির কাছে বৃহস্পতিবার পাঠিয়ে দেওয়া হয়েছে ভোটের চূড়ান্ত ফলাফল। রীতি অনুযায়ী রাষ্ট্রপতি ডাকবেন সর্ববৃহৎ দলকে। অর্থাৎ বিজেপিকে। তখনই জোট শরিকদের সমর্থনের চিঠি দিয়ে সরকার গড়ার দাবি জানাবেন মোদি। তারপরই শপথগ্রহণ।
তৃতীয়বারের জন্য সরকার গঠন করা হচ্ছে। অথচ দিল্লির বিজেপি সদর দপ্তর, সরকারের অন্দরমহল কিংবা দলের শীর্ষ নেতৃত্বের আচরণে উচ্ছ্বাস-উদ্দীপনাটাই উধাও! চিহ্ন নেই মেগা সেলিব্রেশনেরও। সরকার গঠনের প্রক্রিয়া যত এগচ্ছে, ততই বাড়ছে প্রত্যেক শরিকের দাবি-দাওয়া। শুধুই যে মন্ত্রক নিয়ে দর কষাকষি নয়, স্পর্শকাতর আবেগেও টান পড়েছে—সঙ্ঘ পরিবারের এজেন্ডা। তৃতীয়বার অনায়াসে ৪০০ পার করে সরকারে ফেরা, আর তারপর একে একে এক দেশ এক নির্বাচন, অভিন্ন দেওয়ানি বিধি চালু যেন ছিল সময়ের অপেক্ষা। কিন্তু না। জোটের স্পিডব্রেকার এসে গিয়েছে। একই সুরে বিহারের দুই জোট শরিক সংযুক্ত জনতা দল এবং লোকজনশক্তি পার্টি (রামবিলাস) দাবি করেছে, অগ্নিবীর প্রকল্প বন্ধ করে দিতে হবে। নীতীশ কুমারের দলের নেতা কে সি ত্যাগী আরও বলেছেন, ‘অভিন্ন দেওয়ানি বিধি নিয়ে আমাদের নীতিগত সমস্যা নেই। কিন্তু কোনও সম্প্রদায়কে টার্গেট করার জন্যই এই আইন করা হলে আমাদের আপত্তি আছে।’ অন্যদিকে আবার ওয়ান নেশন ওয়ান ইলেশকশনে সায় নেই চন্দ্রবাবু নাইডুর। তার উপর এই দুই প্রধান শরিকই এখন থেকে দাবি জানাচ্ছে, তাদের রাজ্য অর্থাৎ বিহার ও অন্ধ্রপ্রদেশকে স্পেশাল স্টেটাস দেওয়ার প্রক্রিয়া শুরু করতে হবে। নীতীশ কুমার কেন্দ্রের অন্যতম চালিকাশক্তি হওয়ায় রাজনৈতিকভাবে তাঁকে তেজস্বী যাদব চেপে ধরতে শুরু করেছেন। তিনি বলেছেন, ‘নীতীশ কুমার নয়া সরকারের শক্তি। অতএব তিনি নিশ্চয়ই বিহারকে স্পেশাল স্টেটাস দেবেন এবং কাস্ট সেন্সাসও শুরু হবে।’ আগামী বছর বিহারের বিধানসভা ভোট। সুতরাং বোঝাই যাচ্ছে, মুখ্যমন্ত্রী তথা কেন্দ্রের চালিকাশক্তি নীতীশের উপর কিন্তু তেজস্বী চাপ বাড়িয়ে যাবেন।
যে কোনও জোট সরকার গঠনে প্রধান মাথাব্যথা হল মন্ত্রক বণ্টন। একক গরিষ্ঠতার সরকারে সেই চাপ ছিল না মোদির উপর। নিজের পছন্দমতো মন্ত্রক দিয়েছিলেন শরিকদের। তাদেরও বাধ্য হয়ে মেনে নিতে হয়েছে। সেই চিত্র সম্পূর্ণ উল্টে গেল। শুধু কৃষিমন্ত্রকের দাবিদার তিন শরিক। নীতীশ কুমার, চিরাগ পাসোয়ান এবং এইচ ডি কুমারস্বামী। ভারত সরকারের মন্ত্রিসভায় যাদের বলা হয় বিগ ফোর, সেই অর্থ, স্বরাষ্ট্র, প্রতিরক্ষা ও বিদেশ কাউকে দিতে নারাজ বিজেপির শীর্ষ নেতৃত্ব। কিন্তু সেই জেদ ধরে রাখা সম্ভব হবে কি? প্রশ্নের কারণ, ক্ষমতায় আসছে এনডিএ সরকার, মোদি সরকার তো নয়!
এনডিএ বৈঠকে চন্দ্রবাবু নাইডু ও নীতীশ কুমারের সঙ্গে নরেন্দ্র মোদি।
![](https://bangobarta.webbandhanofficial.com/wp-content/uploads/2024/06/modi.jpg)
![](https://bangobarta.webbandhanofficial.com/wp-content/uploads/2024/06/tally.jpg)