![](https://bangobarta.webbandhanofficial.com/wp-content/uploads/2024/06/bjp.jpg)
ক্ষোভটা ভোটের আগে ইতিউতি ছিলই। কিন্তু বিপর্যয়ের পর সেটাই দাবানলের চেহারা নিয়েছে। দলের নেতাদের বিরুদ্ধে প্রকাশ্যে ক্ষোভ ঠিকরে বেরিয়ে আসছে দিলীপ ঘোষ, সৌমিত্র খাঁ, জগন্নাথ সরকারদের। লোকসভার ফল প্রকাশের দু’দিনের মধ্যে বিজেপির অন্দরে ক্ষোভের লাগাতার বিস্ফোরণের ইঙ্গিত মিলছে, বঙ্গ বিজেপির শীর্ষস্থানীয় নেতাদের উপর শাস্তির ‘খাঁড়া’ কার্যত সময়ের অপেক্ষা। খোদ সঙ্ঘ পরিবার বেজায় ক্ষুব্ধ বঙ্গ বিজেপির আচরণে। রাজ্য সংগঠন ও পরিষদীয় দলে বদলের চাপও দিতে শুরু করে দিয়েছেন সঙ্ঘের কার্যকর্তারা।
বস্তুত, ভোট মিটতেই দলের একাধিক নেতার বিরুদ্ধে ক্ষোভ উগরে দিতে সময় নেননি দিলীপ ঘোষ। আসন বদল করে তাঁর পরাজয়ের পিছনে ‘কারসাজি’ বোঝাতে গিয়ে দলের ‘স্বঘোষিত কর্তা’র দিকেই আঙুল তুলেছেন তিনি। বৃহস্পতিবার দিলীপের বিস্ফোরক বক্তব্য, ‘ওল্ড ইজ গোল্ড! পুরনোদের ছেড়ে দিলে বিজেপি পার্টি আর বিজেপি থাকবে না। সেটা অন্য কিছু হয়ে যাবে।’ এই প্রসঙ্গে প্রয়াত প্রধানমন্ত্রী অটলবিহারী বাজপেয়ির একটি বক্তব্য সমাজমাধ্যমে পোস্ট করেছেন দিলীপবাবু। অটলবিহারী বাজপেয়ী বলেছিলেন, ‘আমার একটা কথা মাথায় রাখবেন। দলের পুরনো একজন কর্মীকেও অবহেলা করা যাবে না। প্রয়োজনে নতুন কার্যকর্তাদের আলাদা রাখতে হবে। কিন্তু পুরনো কার্যকর্তারাই আমাদের বিজয়ের গ্যারান্টি। প্রথমেই নতুনদের উপর ভরসা করা উচিত নয়।’ এহেন ইঙ্গিতবাহী পোস্ট কাকে বা কাদের লক্ষ্য করে, তা নিয়ে জল্পনা শুরু হয়েছে। প্রকাশ্যেই দিলীপবাবু স্বীকার করে নিয়েছেন, সংগঠন ঢিলে হয়ে গিয়েছে। বুথে লোক খুঁজতে, এজেন্ট পেতে কালঘাম ছুটেছে। সংগঠনে দুর্বলতা ছিল। সব জায়গায় ভোট কমেছে, হার হয়েছে।
একইসঙ্গে মাথাচাড়া দিচ্ছে দিলীপবাবুকে মেদিনীপুর থেকে সরিয়ে দেওয়ার ইস্যু। এই সিদ্ধান্ত ঘিরে ইতিমধ্যেই ক্ষোভ উগরে দিয়েছেন বিষ্ণুপুরের বিজেপি প্রার্থী সৌমিত্র খাঁ। এবার রানাঘাটের বিজেপি প্রার্থী জগন্নাথ সরকারের কণ্ঠেও এক সুর। তিনি বলেছেন, ‘সংগঠন বেশ কিছু এলাকায় শক্তিশালী হতে পারেনি। দুর্বলতা আছে। একজনকে বদল করে অন্য জায়গায় ট্রান্সফার করায় ভালো ফল আসেনি। দিলীপ ঘোষকে আনকোরা জায়গায় নিয়ে যাওয়া ঠিক হয়নি। আরও কয়েকজনের ক্ষেত্রে সেই সমস্যা পোহাতে হয়েছে।’
দলে ‘বেসুরো’র সংখ্যা যেভাবে বাড়ছে, তাতে দিলীপ কাণ্ডে ‘মলম’ লাগাতে নতুন কিছু চিন্তাভাবনা করছেন বঙ্গ বিজেপির নেতারা। জুন মালিয়া সাংসদ হওয়ায় বিধায়ক পদে ইস্তফা দেবেন। ফলে মেদিনীপুর বিধানসভা আসনে উপ নির্বাচন হবে। সেখানে দিলীপ ঘোষকে প্রার্থী করে ক্ষোভ ধামাচাপা দেওয়ার পরিকল্পনা চলছে। আবার অনেকেই মনে করছেন, সঙ্ঘ পরিবারের চাপে রাজ্য বিজেপিতে রদবদল করা হবে। মোদির শপথের পরেই দেশজুড়ে সাংগঠনিক রদবদলের পথে হাঁটবে বিজেপি। জানা গিয়েছে, সুকান্ত মজুমদারকে বিজেপির রাজ্য সভাপতি পদ থেকে সরিয়ে দেওয়া শুধুমাত্র সময়ের অপেক্ষা। দিল্লিতে সুকান্তবাবুকে কোনও দায়িত্ব দেওয়া হবে কি না, প্রশ্ন আছে। উত্তরপ্রদেশ, হরিয়ানার মতো বিজেপি শাসিত রাজ্যেও সাংগঠনিক স্তরে ঢালাও বদল করতে চলেছে বিজেপি। সর্বভারতীয় সভাপতি জে পি নাড্ডার সম্প্রসারিত মেয়াদ শেষ হচ্ছে জুন মাসে। বিজেপির শীর্ষ সূত্রে ইঙ্গিত, সম্ভবত নাড্ডাকেও সাংগঠনিক দায়িত্ব থেকে অব্যাহতি দেওয়া হবে।
![](https://bangobarta.webbandhanofficial.com/wp-content/uploads/2024/06/bjp.jpg)